দারিদ্র মুক্তির যুদ্ধে ভারত, পাকিস্তান, ভুটানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক
নিরন্ন
, বিষণ্ণ মুখগুলো ধীরে ধীরে উধাও আঁধার পেরিয়ে আলোর দিকে বাংলাদেশের গ্রাম দশ বছর আগেও অর্ধেক মানুষ ছিল হতদরিদ্র এক বেলা ভাত জুটলেই হল দুবেলা আহার বিলাসিতা মাথার উপর ছাদ নেই ভাত কাপড়ের হাহাকার দারিদ্রের চক্রব্যুহে বন্দি ফন্দিফিকিরে নির্যাতন কম না যন্ত্রণার থেকে নিষ্কৃতি পেতে মাথা খোঁড়া বার স্বচ্ছলতায় ফেরা চাষবাস বারো মাস ফসল ফলনে আহ্লাদ নষ্ট হওয়ার ভয় নেই হু হু করে পণ্য বোঝাই ট্রাক ছুটছে বাজার থেকে সে বাজার চার লেনের চওড়া রাস্তা বাতাসের বেগে যাতায়াত অতীতের দিন ছিল ভয়ঙ্কর ফসল ফললেও পচে নষ্ট চাল তবু থাকে আলু, পটল, কুমড়ো, বেগুন, ঢেঁড়শ, ঝিঙে আগলে রাখা যায় কত দিন! পরিবহণের খরচ তখন আগুন লাভের গুড় পিঁপড়েয় খায় পকেটে টাকা আসে না মাঝখান থেকে দাঁও মারে ফড়েরা দিশেহারা হয়ে থাকা আর নয় রাজনীতিঅর্থনীতির সাঁড়াশি আক্রমণে দারিদ্র ধরাশায়ী গরিবি রুখে আর্থসামাজিক বিকাশ একবারে দারিদ্রমুক্ত হতে আরও একটু সময় দরকার ২০০৫ বাংলাদেশে দরিদ্র মানুষ ছিলেন মোট জনসংখ্যার ৪৩. শতাংশ সেটা কমে এখন মাত্র ১২. শতাংশ অতিদরিদ্র নেই বললেই চলে বিশ্বব্যাঙ্কের রিপোর্টে ভূয়সী প্রশংসা তারা জানিয়েছে, দারিদ্র জয়ের লড়াইয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে ভারত, ভুটান, পাকিস্তানের চেয়ে

বাংলাদেশে বিশ কোটির মধ্যে তলায় পড়ে মাত্র কোটি ৮০ লাখ। তাদের টেনে তোলা হচ্ছে। বিশ্বে হতদরিদ্র ৭৭ কোটি। তার ৫১ শতাংশ বা ৩৯ কোটির বাস আফ্রিকায়। ৩৪ শতাংশ থাকে দক্ষিণ এশিয়ায়। বাকিরা ইউরোপ, আমেরিকায়। সব জায়গাতেই মাথায় নজর বেশি। পায়ের যত্ন কম। যারা নীচে পড়ে, তাদের মাড়িয়ে গেলেও অসুবিধে নেই। দুনিযায় যা কিছু সংকট তার সূত্রপাত দারিদ্র থেকেই। গরীবের ঘরই সন্ত্রাসের আঁতুরঘর। সব দেশ যদি সমান ভাবে সে দিকে লক্ষ্য দিত তাহলে বিশ্বের অনেক বিপর্যয় ঠেকানো যেত

বিশ্বব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বাংলাদেশ সফর করে সন্তুষ্ট। দেশটার উন্নতির গতিপ্রকৃতির রিপোর্ট খতিয়ে দেখে তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশ বিশ্বকে এখনই চমকাচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও অবাক করবে। সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় দারিদ্র মোচনকেই সব থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ১৫ বছরে দারিদ্রমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রস্তাব গৃহীত। প্রত্যেক দেশ যদি দারিদ্রের হার তিন শতাংশের নীচে নামাতে পারে তা হলেই হবে। মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি এক শতাংশ বাড়লে দারিদ্র কমে . শতাংশ। বাংলাদেশ যদি বছরে . শতাংশ হারে জিডিপি বাড়াতে পারে তাহলে ২০৩০ অতি দরিদ্রের হার .১৬ শতাংশে নেমে আসবে। চলতি বছরের বাজেটে জিডিপি বৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে . শতাংশ। আগামী বছরে আরও . শতাংশ বাড়াতে হবে। তার জন্য দরকার ব্যক্তিগত বিনিয়োগ বৃদ্ধি। সেই সঙ্গে ক্রয় ক্ষমতার গভীরতা। বিদেশি বিনিয়োগের প্রসার, ব্যাপক রফতানিতে ডলার জমছে। দেশে সঞ্চয়ের অভাব নেই। টাকাটা ঠিকঠাক কাজে লাগালেই হল। বিনিয়োগে অন্যতম বাধা বিদ্যুৎ। বিদ্যুতের সংযোগ পেতে সময় লাগে ৪০৪ দিন। নির্মাণের অনুমতি পেতে ২৭৮ দিন। আইনি নিষ্পত্তিও সময় সাপেক্ষ। সব কাজ দ্রুত লয়ে হলে পরিকাঠামোর উন্নতি হবে। অর্থনীতি বিনিয়োগ বান্ধব হয়ে উঠবে

এবছর সরকারি বেতনভাতা বৃদ্ধিতে জিডিপি বেড়েছে। টাকার মূল্যও ঊর্ধ্বমুখী। আগে আমদানি করা এক জোড়া কমলা লেবু কিনতে লাগত ৫২ টাকা। এখন লাগে ২৫ টাকা। বিশ্বব্যাঙ্কের নিয়মে, ব্যক্তির দৈনিক আয় .৯০ ডলার বা বাংলাদেশি ১৪৮ টাকার নীচে হলে দরিদ্র বলে ধরা হয়। অসংগঠিত শ্রমিককৃষকদের আয় এখন এর থেকে অনেক বেশি। দৈনিক ৫০০ টাকার কম নয়। জিডিপি বাড়িয়ে দেশকে দারিদ্র মুক্ত করাটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা

LEAVE A REPLY