জয়পুরহাট জেলার কৃষকরা আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছে

সোসাইটিনিউজ ডেস্ক:
জয়পুরহাট জেলার কৃষকরা মহা ধুমধামে আমন ধান কাটা মাড়াই শুরু করেছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলার পাঁচ উপজেলার সর্বত্র এখন কৃষকরা আমন ধান কাটা মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। জমিতে আমন ধান লাগানোর পরে তেমন কাজ থাকতো না কৃষক ও মজুরদের হাতে ফলে আশ্বিন-কার্তিক মাসে কাজের অভাব থাকতো। চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে হতো দৈনন্দিন খরচ চালাতে।

বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার অনুযায়ী নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এর ফলশ্রুতিতে উদ্ভাবন করা হয় ব্রি ধান-৩২, ৩৩, ৩৪, ৩৯, ৪৯, ৫১, ৫২, ৫৬, ৬২, হাইব্রিড ধানীগোল্ড,স্বর্ণ-৫ বিনা-৭, জিরা শাইল, গুটিস্বর্ণা ও কাটারী ভোগ জাতের আমন ধান। এছাড়াও স্থানীয় মামুন ও রনজিত, পটল পাইরী, চয়ন জাতের ধান স্বল্প সময়ে (৯০ দিন) অল্প খরচে কৃষকের ঘরে ধান উঠতে শুরু করে।

সরকার উত্তরাঞ্চলে সামাজিক নিরাপত্তা মূলক কর্মসূচীর আওতায় প্রায় বছর ব্যাপী ভিজিএফ, ভিজিডি, কাবিখা, কাবিটা, টিআর, হত দরিদ্রদের জন্য খাদ্য বান্ধব কর্মসূচী হিসাবে ১০ টাকা কেজি চাল ও ওএমএস সহ নানা কর্মসূচী গ্রহণ করে। ফলে জয়পুরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের মানুষের অভাব দূর হয়েছে। ব্রি ধান-৩২, ৩৩, ৩৯, ৪৯, ৫৬, ৬২, হাইব্রিড ধানীগোল্ড,স্বর্ণ-৫ ও বিনা-৭ জাতের আমন ধান আগামজাত হওয়ায় স্বল্প সময়ে এ ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরো জানায়, নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচীর আওতায় ২০১৬-২০১৭ মৌসুমে জয়পুরহাট জেলায় রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৬৯ হাজার ৮শ ৮০ হেক্টর জমি। চাষ হয়েছে ৭২ হাজার ১৭০ হেক্টর যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ২শ ৯০ হেক্টর বেশি। এতে চালের উৎপাদন আড়াই লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। কালাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান ওই উপজেলায় ১০ ভাগ ধান কাটা-মাড়াই শেষ হয়েছে। এছাড়া ক্ষেতলাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর কবীর জানান, আলু চাষের জন্য এ উপজেলার কৃষক আগাম জাতের ধান হিসাবে বেশিরভাগ জমিতে স্বর্ণ-৫ ও বিনা-৭ চাষ করে থাকেন।

কালাই উপজেলার শুরাইল গ্রামের কৃষক আবুল কাশেম বলেন, এবার ৮ বিঘা জমিতে আগাম জাতের বিনা-৭ ধান চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন, সরাইল গ্রামের কৃষক আতিকুল ইসলাম এবার ৫ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ধান চাষ করে বিঘা প্রতি ১৬/১৭ মন ধান পেয়ে খুশি বলে জানান। ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত জেলায় ১০ ভাগ কাটা মাড়াই সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলায় এবার রোপা আমন চাষে জেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগ ও রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি অফিস নিবিড়ভাবে মনিটরিং করে। জেলায় এবার বীজ ও সারের কোন সঙ্কট ছিল না এবং আবহাওয়া ভাল থাকায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক তাহেরুল ইসলাম ।
সূত্র: বাসস