শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের নামে সড়ক উদ্বোধন করলেন এমপি !

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের নামে সড়ক উদ্বোধন করা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে । জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য এড. জিয়াউল হক মৃধার নির্বাচনী এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এ এই ঘটনা ঘটেছে।

সংসদ সদস্য এড. জিয়াউল হক মৃধা বলেছেন, আব্দুল হাকিম ওই সময়ে (মুক্তিযুদ্ধকালীন) শান্তি কমিটির প্রধান থাকলেও তিনি সবসময় সাধারণ মানুষকে পাকিস্তানী বাহিনীর নৃশংসতা থেকে রক্ষায় সচেষ্ট ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সাধারণ মানুষের জীবন-মাল রক্ষায় তার যে ভূমিকা এটা স্মরণ করতেই মূলত সড়কটির নাম রাখা হয়েছে আব্দুল হাকিম চেয়ারম্যান সড়ক।

তবে তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে কালীকচ্ছ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুছা মৃধা বলেন, আব্দুল হাকিম শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন আর তার ছেলে মফিজুল ইসলাম ছিলেন রাজাকার কমান্ডার।

আবু মুছা মৃধা জানান, এই রাস্তা উদ্বোধনের আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সঙ্গে এমপি কোন যোগাযোগ করেননি। তিনি এমপি হওয়ায় প্রশাসনও তার কথা মতো চলে। আমরা এই রাস্তার (চাকসার-ধর্মতীর্থ-কোষারপাড়া) নাম শান্তি কমিটির চেয়ারম্যানের নামে করায় আন্দোলনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। এ জন্য আমি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের মিটিং আহবান করেছি।

এদিকে কালীকচ্ছ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ কাওসার আলম বাবুল এমপি জিয়াউল হক মৃধার সঙ্গে কিছুটা একমত পোষণ করে বলেন, আমরাও এমনটাই শুনেছি যে তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এলাকাবাসীকে নানা ভাবে সহায়তা করেছেন।

ধর্মতীর্থ গ্রামের বাসিন্দা মৃত আব্দুল হাকিম একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন বলেই তাকে শান্তি কমিটির দায়িত্ব নিতে হয় দাবি করে এমপি জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ওই সময়ে আব্দুল হাকিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাই তাকে বাধ্য হয়েই শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হতে হয়। কিন্তু শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হলেও তিনি এলাকাবাসীকে আগলে রেখেছিলেন। এমনকি আমি আর আমার ভাই একবার পাঞ্জাবিদের হাতে আটক হলে-জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনি আমাদের বাঁচিয়ে এনেছিলেন।

এ প্রসঙ্গে সংসদ সদস্য এড. জিয়াউল হক মৃধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. কালিপদ সেনের একটি বইয়ের উদাহরণ টেনে এনে বলেন, আপনারা একটু খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন সম্প্রতি ড. সেন একটি বই লিখেছেন। ওই বইয়ে মুক্তিযুদ্ধকালীন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল হাকিমের জনহিতকর কাজের প্রশংসা করা হয়েছে।

LEAVE A REPLY