সোসাইটিনিউজ ডেস্ক: কেউ কেউ বলেন, পৃথিবীতে মা-বাবার চেয়েও বন্ধু আপন। বন্ধুর চেয়ে দরদি আর কেউ নেই। যান্ত্রিক এ যুগে আমরা অনেকেই মা-বাবাকে দূরে রেখে শহরে একাকি বসবাস করছি। কারো কারো সঙ্গে গড়ে উঠছে বন্ধুত্বের সম্পর্ক। রোগে-শোকে, দুঃখ-কষ্টে মা-বাবাকে তৎক্ষণাৎ কাছে না পেলেও কাছে পাচ্ছি পাশের বন্ধুটিকে।
কিন্তু চাইলেই অবতারের মতো বন্ধু নাজিল হবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই! আমাদের চলাফেরার পথেই কাউকে কাউকে দেখি অন্যরকম। তাদেরই কেউ হয়ত কোন উপলক্ষে কাছে চলে আসেন, হয়ে উঠেন পরম বন্ধু। এই বন্ধুটিকে তখনই সবচেয়ে ভালো করে চেনা যায়- যখন কোনো বিপদ আপনাকে চেপে ধরে। বিপদের সময় বন্ধুটির ভূমিকাই বলে দেবে তার বন্ধুতা কতটা দরকারি কিংবা অদরকারি।
গবেষকরা অবশ্য বন্ধু নির্বাচনের সময় স্বার্থপর মানুষ চেনার কতগুলো সহজ উপায় বলে দিয়েছেন, তারা বলছেন স্বার্থপররা অন্যকে মুগ্ধ করতে পারেন বেশি, চটপটে কথা ও চালচলনে অন্যের মনোযোগও দ্রুত কাড়েন। কিন্তু ওই যে ভেতরে স্বার্থপরতা রয়েছে, তাই শিগগিরই তার রূপটিও বেরিয়ে পড়ে। তাই বন্ধু বাছাইয়ে স্বার্থপরদের এড়িয়ে চলুন।
নারী-পুরুষে বন্ধুতা হয় না, একথাও পুরোপুরি ঠিক নয়। বন্ধুতার মাপকাঠিতে লিঙ্গ কোনো ফ্যাক্টর নয়- বরং মনের মিল, ত্যাগের মানসিকতাই বড় কথা।
আত্মকেন্দ্রিক আচরণ যদি আপনার মধ্যে থাকে, তবে সেটি দূর করার চেষ্টা করুন। কারণ আত্মকেন্দ্রিকরা আর যাইহোক ভালো বন্ধু হতে পারেন না।
ত্যাগেই সুখ, ভোগে নয়- এ আপ্তবাক্য যেমন মনে রাখবেন। তেমনি কখনও কখনও কঠোর হবেন ত্যাগের ব্যাপারে। তখনই আপনার বন্ধুটি কতটা ত্যাগী সেটা বুঝতে পারবেন। সঠিক বন্ধু চেনার এটিও একটি উপায়।
বন্ধুর পছন্দ-অপছন্দকে প্রাধান্য দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। তার মানে কিন্তু এটা নয়- নিজের পছন্দ-অপছন্দকে ছেটে ফেলবেন! সেটাকেও আমলে নিন। দেখুন আপনার বন্ধুটির প্রতিক্রিয়া। বুঝতে পারবেন, আপনার বন্ধুটি কেমন।
সারাক্ষণ আড্ডা, হৈহুল্লোড়ে কাটাবেন না, পড়াশোনা করুন। ভাবছেন ছাত্রত্ব কবে গেছে! এখন আবার পড়াশোনার চাপ! না, প্রতিদিনের সংবাদপত্র পড়ুন, বই পড়ুন, যা পড়তে ভালো লাগে তাই পড়ুন। জানার জগৎটা বড় হবে। বন্ধমহলে আড্ডার সময় নিজের জানাটা কাজে দেবে।
সবচেয়ে বড় কথা- বন্ধুতা আপনি যেমন অন্য কারো চান, তেমনি কেউ না কেউ আপনার বন্ধুতাও চান। তাই একে একে মিললে দুই হবে! বন্ধুতাও জমে ক্ষীর হয়ে উঠবে।