গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে রোববার সন্ধ্যা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এ অভিযান চলে।
এ সময় আখ কাটাকে কেন্দ্র করে খামার শ্রমিক-ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশ কর্মকর্তাসহ উভয়পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন তীরবিদ্ধ হয়েছেন।
রংপুর চিনিকলের (রচিক) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আউয়াল জানান, রচিক কর্মচারী-শ্রমিকরা সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারে আখ কাটতে যান। এসময় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ১৫/২০ জন বাধা দেন। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাঁধে।
অপরদিকে সাহেবগঞ্জ ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী সরকার জানান, আখ কাটার নামে রচিকের কর্মচারী-শ্রমিকরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজনকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করলে এই সংঘর্ষ বাঁধে।
তিনি আরো জানান, দুপুরের দিকে সেখানে হামলা চালানোর পর থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন আত্মগোপন করে। এরপরও তাদের কমপক্ষে অর্ধশতাধিক বসত ঘরবাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন পুলিশ দেখে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে তীর ছোড়ে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্যসহ উভয়পক্ষের ১০ জন তীরবিদ্ধ হন। এসময় পুলিশও রাবার বুলেট ছোড়ে। আহতদের মধ্যে সাতজনকে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ সময় গাইবান্ধা জেলা অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মিজানুর রহমান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল হান্নানের উপস্থিতিতে বিকাল থেকে এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চলে।
উল্লেখ্য, সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের ১৮৪২ একর জমি উত্তরাধিকার সূত্রে নিজেদের বলে দাবি করে আসছেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর লোকজন। তারা ইতোমধ্যে প্রায় ১২০০ একর জমি দখলে নিয়ে বাড়িঘর নির্মাণ করে সেখানে বসবাস করছেন। অপরদিকে, রংপুর চিনিকল কর্তৃপক্ষ তাদের জমি থেকে উচ্ছেদে রেলপথ অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রেষারেষি চলছে।