বিশ্বকে হতবাক করে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা তাদের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিয়েছে নিউ ইয়র্কের ধনকুবের রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।
অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া যুক্তরাষ্ট্রকে আবারও প্রভাবশালী করার ডাক দিয়ে নির্বাচনে অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছেন ট্রাম্প।
এই জয়ের ফলে পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি হিসেবে পরিচিত হবেন ট্রাম্পের তৃতীয় স্ত্রী সাবেক মডেল মেলানিয়া।
সাধারণ ঘরে জন্ম নেয়া মেলানিয়ার ক্যারিয়ার শুরু হয় মডেলিংয়ের মাধ্যমে, তারপর ধনাঢ্য ব্যবসায়ীর স্ত্রী।
স্লোভানিয়ায় জন্ম নেয়া ৪৬ বছর বয়সী মেলানিয়া নব্বইয়ের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন করে মডেলিং পেশায় জড়ান। ২০০৫ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি।
ডেইলি মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, নব্বইয়ের দশকে নিউ ইয়র্কে একটি যৌন সেবাদাতা এস্কর্টে খণ্ডকালীন কর্মী হিসেবে কাজ করার সময় মেলানিয়ার সঙ্গে ট্রাম্পের পরিচয় হয়।
স্লোভানিয়ান ম্যাগাজিন সুজির বরাতে মেইল জানায়, মেলানিয়া যেই মডেলিং সংস্থায় কাজ করতেন তা যৌন এস্কর্টসেবাও দিত।
ট্রাম্পের তৃতীয় স্ত্রী মেলানিয়া। স্বামীর চেয়ে ২৪ বছরের ছোট তিনি। তাদের ব্যারন নামে ৯ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।
স্লোভানিয়ার সেভনিকা শহরে জন্ম নেয়া মেলানিয়া স্কুলে শান্ত-সুবোধ লাজুক মেয়ে হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই মেলানিয়া খুব লাজুক প্রকৃতির। বাবা ভিক্টর নাভস ছিলেন গাড়ির ডিলার। মা আমালিয়া কাজ করতেন পোশাক কারখানায়।
প্রাথমিক স্কুল পর্ব শেষে স্লোভানিয়ার রাজধানী লুবিয়ানার এক উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তে যান মেলানিয়া। সেখানেই তাকে দেখে ফেলেন ফটোগ্রাফার স্টেইন জেরকো। ৫ ফুট ১১ ইঞ্চি উচ্চতার আকর্ষণীয় ফিগারের অধিকারী কিশোরীটির ছবি তুলে নিতে ভুল করেননি স্টেইন। সেভনিকায় থাকতেই মডেল হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন মেলানিয়া। স্টেইনের চোখে পড়ায় স্বপ্ন পূরণে বেশি সময় লাগেনি।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে মডেল হিসেবে পেশাদার ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। প্রথমে স্লোভানিয়ায়, তারপর ইটালির মিলান, ফ্রান্সের প্যারিস হয়ে ১৯৯৬ সালে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। বড় বড় ফ্যাশন হাউসগুলোতে তখন তার খুব চাহিদা। ইংরেজি, ইটালিয়ান, ফরাসি এবং জার্মান ভাষা শিখে প্রতিষ্ঠা সহজসাধ্য করার কাজও অনেকটাই সেরে নিয়েছেন ততদিনে।
নিউ ইয়র্কে প্রথম সাক্ষাতেই মেলানিয়াকে ট্রাম্পের ভালো লেগে যায়। নিজের ফোন নাম্বার দিয়ে বলেছিলেন, ‘ফোন করো’। মেলানিয়া পাত্তা দেননি কারণ ডোনাল্ড পার্টিতে এসেছিলেন আরেক নারীর সাথে। পরে ট্রাম্পই আবার ফোন করে দেখা করতে চান। সেই দেখার সুবাদেই ১৯৯৬ সালে ২৪ বছরের বড় ট্রাম্পকে বিয়ে করেন মেলানিয়া।
এবার সেই মেলানিয়াই বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের `ফার্স্ট লেডি` হতে যাচ্ছেন।