আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সম্প্রতি ভারতে বাতিল হওয়া ৫০০ এবং ১০০০ রুপির নোট পরিবর্তন করে সমপরিমাণ টাকা নেওয়ার প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়া না করে সবার প্রতি ধৈর্য ধরার আবেদন জানিয়েছেন । শনিবার ভারতের গণমাধ্যমে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
ব্যাংকিং কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলতে সাহায্য করতেও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে অরুণ জেটলি বলেন, ‘গেল পাঁচ দিন ব্যাংকগুলোতে যে ভিড় হয়েছে, তা অন্য যে কোনো সময়ের চেয়ে শত শত গুণ বেশি। বর্তমানে ১৪ লাখ কোটি রুপি সার্কুলেশন আছে। আমরা জানি এই পরিবর্তন এক রাতের মধ্যে সম্ভব নয়। চাহিদা মেটানোর মতো যথেষ্ট নগদ অর্থ আছে। এটি একটি বিশাল প্রক্রিয়া, যা মাত্র শুরু হয়েছে। দেশের প্রতিটি এটিএম বুথে ২০০০ টাকার নোট পাঠাতে আরও দুই থেকে তিন সপ্তাহের মতো সময় লাগবে। তার আগ পর্যন্ত বুথগুলোতে এক শ নোটের রুপি সংগ্রহ করা যাবে।’
বুথগুলোতে ৫০০ রুপি এবং ১০০০ রুপির নোট বাতিল ঘোষণার আগে নতুন ৫০০ রুপির নোট এবং ২০০০ রুপির নোট সরবরাহ করা সম্ভব ছিল না জানিয়ে জেটলি বলেন, গোপনীয়তা বজায় রাখা জরুরি ছিল। আমরা আগে থেকে কাজ শুরু করলে তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনা থাকত। যা আরও বিশৃঙ্খলা তৈরি করত।
জেটলি জানান, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও এর গত আড়াই দিনে ৫৪ হাজার ৩৭০ কোটি রুপি লেনদেন করেছে। জমা পড়েছে প্রায় ৪৭ হাজার ৮৬৮ কোটি রুপি। ভারতের ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে এ ব্যাংকটি।
ভারতে গত মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে বাতিল হয়ে গেছে ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট। জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে এ ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাল নোট এবং কালো রুপির বিতরণ রুখতেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে ভাষণে মোদি বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন উপায়ে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি রুপি ফিরিয়ে এনেছি।’
সরকারি ঘোষণায় বলা হয়, যাঁদের হাতে এসব নোট আছে, তাঁরা এগুলো জমা দিয়ে ১০ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে সমমূল্যের অর্থ পাবেন। তবে এ জন্য তাঁদের আধার কার্ড, প্যান কার্ড বা ভোটার আইডি দেখাতে হবে। ব্যাংক ও পোস্ট অফিস থেকে নোট জমা দিয়ে অর্থ পাবেন এর বাহকেরা। ৩০ ডিসেম্বরের পর শুধু রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া বাতিল হওয়া এসব নোট নেবে। ঘোষণার পর গত বুধবার ব্যাংকগুলো বন্ধ রাখা হয়।
এরপর গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দেশজুড়ে সব ব্যাংকে দেখা গেছে লম্বা লাইন। বাতিল নোট জমা দিয়ে রুপি তুলছেন মানুষজন। নাগরিকদের অসুবিধার কথা ভেবে চলতি সপ্তাহের শনি ও রবিবার ব্যাংকগুলোর ছুটি বাতিল করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাংক, পোস্ট অফিস ও এটিএম বুথগুলোয় বিশেষ নিরাপত্তা বিধান করতে রাজ্য সরকারগুলোকে অনুরোধ জানিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।