আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির পরাজিত প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন তার হারের জন্য এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেছেন, নির্বাচনের মাত্র এক সপ্তাহ আগে তার ব্যক্তিগত ই-মেইল নিয়ে এফবিআইয়ের পুনরায় তদন্তের ঘোষণা বিজয়ের অগ্রযাত্রার প্রেরণা নষ্ট করে দিয়েছিল।
ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ দাতাদের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপকালে হিলারি এ অভিযোগ করেন। দাতাদের সঙ্গে হিলারির এ কথপোকথনের কিছু অংশ ফাঁস হয়ে গেছে। কোয়ার্টজ ও সিএনএনসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রী থাকাকালীন হিলারি ক্লিনটন তথ্য আদানপ্রদানে ব্যক্তিগত ইমেইল সার্ভার ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
২০১৫ সালে প্রথম হিলারির ব্যক্তিগত ই-মেইল চালাচালির বিষয়টি ফাঁস হয়। এ সময় এফবিআই তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে গুরুতর কিছু পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছিল। এ কারণে তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ না আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংস্থাটি। তবে আকস্মিকভাবে নির্বাচনের মাত্র ক’দিন আগে এফবিআই নতুন করে হিলারির ই-মেইল চালাচালির ঘটনা তদন্তের ঘোষণা দেয়।
এফবিআই পরিচালক জেমস কোমি কংগ্রেসকে এক চিঠিতে বলেন, হিলারির আরো কিছু ই-মেইলের খোঁজ পাওয়ায় এফবিআই নতুন করে তা তদন্ত করবে। হিলারির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হুমা আবেদিনের সাবেক স্বামী অ্যান্থনি ওয়েনারের ল্যাপটপে ই-মেইলগুলো পাওয়া যায়।
এ নিয়ে কোমি ডেমোক্রেটদের ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। তবে নির্বাচনের মাত্র দুই দিন আগে কোমি আবার ঘোষণা দেন, হিলারির নতুন ই-মেইলেও দোষের কিছু পাওয়া যায়নি।
হিলারি ক্লিনটন শনিবার তার জাতীয় অর্থ কমিটিকে বলেন, নির্বাচনে হারার অনেক কারণ থাকে। তবে আমাদের বিশ্লেষণ হল, জেমস কোমির চিঠি আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য অর্জনের পথে বাধা সৃষ্টি করেছিল। তার চিঠিতে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল যা ছিল একেবারেই ভিত্তিহীন।
হিলারি বলেন, জেমস কোমির অভিযোগের পর প্রচারণার গতি বরং আরো বাড়িয়ে দেয়া উচিত ছিলো।
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনে ২০০৯ থেকে ১৩ সাল পর্যন্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন হিলারি ক্লিনটন।
গত মঙ্গলবার নির্বাচনে হারের পর থেকে তাকে প্রকাশ্যে খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।
নির্বাচনের আগমুহূর্তে ই-মেইল কেলেঙ্কারির বিষয়টি আবার উঠে আসার কারণে হিলারি ক্লিনটনের ওপর আমেরিকানদের বিশ্বাসের ঘাটতি তৈরি হয়েছিলো বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। এই ঘটনা অনেক ভোটারের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, বলে তারা মনে করেন।
এদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার প্রতিবাদে শনিবার নিউইয়র্ক, শিকাগো, লস অ্যাঞ্জেলেসসহ দেশটির অনেক শহরে চতুর্থ দিনের মতো বিক্ষোভ হয়েছে।
নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নিউ ইয়র্কের যে বহুতল ভবনে বাস করেন তার সামনে গিয়ে কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তারা শ্লোগান দিচ্ছিলেন, তিনি আমাদের প্রেসিডেন্ট নন।
সূত্র:বাসস