‘গত সাতদিনে ভাত খ্যায়েছি চার বার। পাড়া থেকে ওরা বের হতে দেয় না। কাজও করতে পারিনা। বের হলেই ওরা মারবে বলেছে। কিন্তু কী করব? ক্ষুধার জ্বালা সইতে পারছি না আর। এবার মুক্তি দাও। শুধু পাড়া থেকে বের করে দাও। কথা দিচ্ছি, ভারত চলে যাব। এ দেশে আর ফিরব না।’ মাথার সব চুল পেকে সাদা, চামড়ায় বয়সের ভাঁজ। দৃষ্টির তীক্ষ্ণতাও কমে এসেছে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া দেহ নিয়ে নিজের আক্ষেপ আর আকুতির কথা জানিয়েছেন বেওয়া সরেন (৬৫)।
তিনি বলেন, আমার কাথা বালিশ তোশক সব পুড়ে গেছে। দুটো মুরগী ছিল, একটা ছাগলও ছিল, সব লুট হয়ে গেছে। চাল নাই, চুলো নাই-কোথায় যাই ?
মাদারপুর গ্রামের এই বাসিন্দা সাংবাদিকদেরকে বলেন, এমন কষ্ট কখনই পাইনি বাপু। শাকিল কইলো ঘর তুলো। তুললাম। হুট কইরা কয়, ঘর নামাও। ধার দেনা করে ঘর তুলিছিলাম। হুট করি নামবো ক্যামতে? আমার তো দশটা ঘর নাই।
তিনি আরও বলেন, এই জমি আমাগো বাপের আছিল। পাকিস্তান পিরিয়ড সরকার কয়েছিল, আঁখ না হইলে তোমরা জমি ফিরত পাবা। কিন্তু এখন আঁখও হয়না। জমিও ফিরত দেয় না।
বেওয়া হতাশার সুরে বলেন, আমরা তো মানুষ। প্যাটে খিদা আমাদেরও লাগে। কদিন না খেয়ে থাকবো ?