চলচ্চিত্রকে বিদায় জানালেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ডলি জহুর। তিনি আর কখনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করবেন না বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন। সর্বশেষ ২০১২ সালে এফআই মানিক পরিচালিত ‘দুই পৃথিবী’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। দীর্ঘ ৪ বছরে ডলি আর কোনো চলচ্চিত্রে অভিনয় করেননি। আগামীতে চলচ্চিত্রে আর অভিনয় করার ইচ্ছেও নেই বলে সাফ জানিয়েছেন এ গুণী অভিনেত্রী।
এ প্রসঙ্গে ডলি বলেন, ‘যে কদিন বাঁচি চলচ্চিত্র থেকে দূরে থাকব। ইন্ডাস্ট্রিটা আর আগের মতো নেই। কাজ, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতার মূল্যায়ন বলতে কিছু দেখা যায় না। এখন ক’জন সিনিয়র শিল্পী চলচ্চিত্রে নিয়মিত কাজ করেন? অশৈল্পিক প্রকৃতির লোক এ শিল্পটাকে নষ্ট করে দিয়েছে। তাই চলচ্চিত্রে কাজ করার কোনো পরিবেশ এখন আর নেই। এ ক্ষোভেই এই শিল্প থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি। আগামীতেও আর চলচ্চিত্রে কাজ করার কোনো রকম সম্ভাবনা নেই।’
এদিকে রূপালী পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী বর্তমানে ছোট পর্দায় সরব হয়ে উঠেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় গুণী এই অভিনেত্রী বর্তমানে দুটি ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন। এগুলো হচ্ছে_ মীর সাবি্বরের পরিচালনায় ‘নোয়াশাল’ এবং সাখাওয়াত মানিকের পরিচালনায় ‘মেঘে ঢাকা শহর’। এ ছাড়াও তিনি বর্তমানে কয়েকটি খ-নাটক ও দুটি টেলিছিবিতেও অভিনয় করছেন। এদিকে সর্বশেষ গত অক্টোবরে উত্তরার একটি শুটিং হাউসে ‘মেঘে ঢাকা শহর’ ধারাবাহিক নাটকের শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে ডলি জহুর বলেন, ‘এ ধারাবাহিকের গল্পটি আমার বেশ ভালো লেগেছে। একান্নবর্তী পরিবার আজকাল দেখাই যায় না। কিন্তু এই নাটকে সেই আবহটা তুলে ধরা হয়েছে। এখানে নাসিম ও নাঈম আমার ছেলের চরিত্রে কাজ করেছে। ছেলে আর বউদের সঙ্গে নানা টানপড়েনে আমার সংসারজীবন কাটে। সবমিলিয়ে বলা যায় নাটকটিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ রয়েছে। এতে অভিনয় করে নিজের মধ্যে একটা ভালোলাগা কাজ করেছে।’
এদিকে, দীর্ঘ ছয়মাস পর অস্ট্রেলিয়া থেকে আগস্টের শেষের দিকে দেশে ফিরেছেন ডলি। দেশে ফিরে নাটকে কাজ করার জন্য নিয়মিত প্রস্তাব পাচ্ছেন। কিন্তু অনেকের প্রস্তাব বিনয়ের সঙ্গে ফিরিয়ে দিয়েছেন। কারণ এখন তিনি বেছে বেছে মানসম্মত গল্পে কাজ করতে চান। তা ছাড়া ইদানীং তিনি কিছুটা মানসিক অসুস্থ রয়েছেন।
এর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে রিয়াসত আজিম সস্ত্রীক অস্ট্রেলিয়া থাকে। রিয়াসাত সেখানে শিক্ষকতা করে। গেল এপ্রিলে তার প্রথম সন্তান হয়। কিন্তু সন্তান জন্মের তিন ঘণ্টা পরে মারা যায়। আমি তখন ছেলের কাছেই ছিলাম। এরপর আমার ছেলে মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়ে। আমিও ভীষণ কষ্ট পেয়েছি। তার কিছুদিন পরই আমার ছেলেটা রোড অ্যাক্সিডেন্টের কবলে পড়ে। সেখানে সে শারীরিকভাবে খুব বেশি আঘাত না পেলেও মোটা অঙ্কের অর্থ ক্ষতিপূরণ দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে অনেকটা বিষন্নতার মধ্যেই দিন কাটাচ্ছি। তাই এখন নাটকের শুটিং শেষে দিনের বেশিরভাগ সময় বাসায় থাকি। অবসর সময়গুলোতে টিভি নাটকগুলো দেখার চেষ্টা করি।’