জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পুনর্বাসন ও ত্রাণ কর্মসূচির আওতায় সরকারি ত্রাণ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছে সাঁওতালরা।
উচ্ছেদ অভিযানে ক্ষতিগ্রস্থ মাদারপুর ও জয়পুর পল্লীর সাঁওতালদের ত্রাণ বিতরণ করতে সোমবার ওই এলাকায় যান গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হান্নান, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম ও ওই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আব্দুর রউফ।
কিন্তু প্রাথমিক তালিকাভূক্ত ১শ’ ৫০ জন সাঁওতাল পরিবার জানান, তাদের শর্ত পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা সরকারি ত্রাণ গ্রহণ করবেন না।
ইউপি মেম্বার আব্দুর রউফ জানান, তারা সকাল ৮টার দিকে গোবিন্দগঞ্জের সাপমারা ইউনিয়নের মাদারপুর গ্রামে গিয়ে ওই গ্রামের সাঁওতালদের মন্ডল (মাতব্বর) বারনাবাস টুডুকে ডেকে নিয়ে অসেন। তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানান তাদের ধর্মীয় নেতাসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং সাঁওতাল পরিবারগুলোর সাথে পরামর্শ করে বিষয়টি কি করা যায় তা একটু পরে জানাচ্ছি।
এরপর তিনি আর ফিরে আসেননি এবং তার মোবাইল ফোনটিও ধরা থেকে বিরত থাকেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওই এলাকার মেম্বর সব সাঁওতাল পরিবারের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কেউ ত্রাণ নিতে আসেননি।
তিনি আরো জানান, সাঁওতালদের দাবি হচ্ছে উচ্ছেদকৃত জমিতেই তাদের পুনর্বাসিত করতে হবে। ওই জমির চার পাশ থেকে অবিলম্বে চিনিকল কর্তৃপক্ষের কাঁটা তারের বেড়া অপসারন ও আখ চাষ বন্ধ করতে হবে। সাঁওতালদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। এছাড়া গাইবান্ধা-৩ গোবিন্দগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ ও সাপমারা ইউপি চেয়ারম্যান শাকিল আহমেদ বুলবুলসহ তাদের উচ্ছেদ, হত্যা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটে সহযোগিতা করা এবং তাদের জমি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায়ের বিচার ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
ওই সাঁওতাল পল্লীর বাসিন্দা পাওলুস মাষ্টার বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্থ করে যে ত্রাণ আনা হয়েছে এর পিছনের আবার না কোন ষড়যন্ত্র আছে। তিনি জানান, আমাদের দাবি এই প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে। দাবি পুরুণ না হওয়া পর্যন্ত না হওয়া পর্যন্ত সরকারি ত্রাণ গ্রহণ করা হবে না।
উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ সাঁওতালদের জন্য জরুরি ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ৬ মেট্রিক টন চাল এবং ৫০ হাজার টাকা, ৩শ’ কম্বল বরাদ্দ করেন। ওই দুটি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত ১শ’ ৫০টি পরিবারকে ২০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি লবন, ১ কেজি আলু ও ২টি করে কম্বল বিতরণের জন্য।
এছাড়াও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেয়া হয়, গৃহহীন ছিন্নমুল সাঁওতাল পরিবারদেরকে পুর্ণবাসনের লক্ষ্যে গোবিন্দগঞ্জের কাটাবাড়ি এলাকায় ১০ একর খাস জমি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যেখানে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দেয়া হবে।