প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভারতের সন্ত্রাস দমন আইন অনুযায়ী ৫ বছরের জন্য সংস্থাটিকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে।
এই সিদ্ধান্তের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে করা হবে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকের বেশ কয়েকটি বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করা হলেও মঙ্গলবার রাত এগারোটা পর্যন্ত এই নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক প্রেস রিলিজ দেয় নি ভারতের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো, তবে বার্তা সংস্থার খবরটি ভারতের জাতীয় সংবাদ মাধ্যমগুলি সম্প্রচার করতে শুরু করেছে।
ঢাকার গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারির হামলার পরেই ভারতে অভিযোগ ওঠে যে জাকির নায়েকের পিস টিভি সন্ত্রাসের পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছে। তখনই ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং মহারাষ্ট্র সরকার পৃথকভাবে জাকির নায়েকের সংস্থাগুলি নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন, যার প্রধান জাকির নায়েক নিজেই, তারা বিদেশ থেকে প্রাপ্ত অনুদান পিস টিভি–র অনুষ্ঠান প্রযোজনায় ব্যয় করত বলে অভিযোগ উঠেছিল। পিস টিভি–র অনুষ্ঠানগুলির মাধ্যমে জাকির নায়েক মুসলমান যুবকদের সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ করতেন বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
জাকির নায়েক বিদেশ থেকে ‘স্কাইপে‘র মাধ্যমে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছিলেন যে তাঁর ভাষণগুলির কোথাও তিনি সন্ত্রাসবাদের পক্ষে প্রচার চালান নি। তিনি বলেছিলেন যে ভাষণের একেকটি বিচ্ছিন্ন অংশ তুলে ধরে সেগুলোর অপব্যাখ্যা করছে ভারতের সংবাদমাধ্যমের একাংশ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসারেরা দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে তাঁর প্রায় প্রতিটি ভাষণ খতিয়ে দেখতে শুরু করেন তখনই।
ওই বিতর্কের মধ্যেই ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনকে বিদেশী অনুদান পাওয়ার বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়ায় ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক অফিসারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
তখনই জানা যায় যে ভারতে সম্প্রচারের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন না থাকলেও মুসলমান প্রধান এলাকাগুলোতে স্থানীয় কেবল টিভি অপারেটররা সেটিকে বেআইনিভাবে সম্প্রচার করতেন ‘গ্রাহকদের চাপে‘।
গুলশান হামলার পরেই ভারতের বিভিন্ন মহল থেকে দাবি উঠেছিল যে পিস টিভি–কে ভারতে নিষিদ্ধ করতে হবে।
সেই সময়েই পিস টিভি–র সম্প্রচার আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ভারতের একটি জাতীয় সংবাদ পোর্টাল ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে জানিয়েছে যে তাঁদের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ওই সিদ্ধান্ত পৌঁছনর পরে তাঁরা আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ স্থির করবেন।বিবিসি