রৌমারী স্থলবন্দরে গাফিলতির কারণে বেকার ১০ হাজার শ্রমিক

কুড়িগ্রামের রৌমারীর যাদুরচর-চরফুলবাড়ী ঘাট ভায়া মাদারটিলা এলসি রাস্তার কাজ তিন বছরেও শেষ হয়নি। ফলে বেকার হয়ে পড়ছে রৌমারীর নতুনবন্দর স্থলবন্দরের ১০ হাজারের মতো শ্রমিক। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা পাথর ও কয়লা আমদানি করতে না পারায় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

প্রতিবছর বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পরপর অক্টোবরের শুরুতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে নতুনবন্দর স্থলবন্দরে। প্রতিদিন শত শত ট্রাকে পাথর ও কয়লা আমদানি হয় এলসি রাস্তা ও তুরা রাস্তা দিয়ে, যা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। অন্যদিকে শতাধিক ক্রাশার মেশিনে পাথর ভাঙা হয়। সেখানে দিনমজুরি করেন  হাজারো  শ্রমিক। ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্য ট্রাকে নামানো-ওঠানোর কাজ করে সংসার চালান বহু শ্রমিক। কিন্তু তুরা রাস্তার সংস্কারকাজ শুরু হওয়ায় কর্তৃপক্ষ ওই রাস্তায় ট্রাক চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বিকল্প হিসেবে ছিল এলসি রাস্তা। কিন্তু ওই রাস্তার কাজ তিন বছরেও সমাপ্ত হয়নি। ফলে ওই রাস্তাটিও বন্ধ। এসব কারণে এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকা- প্রায় স্থবির হয়ে আছে। অনাহারে-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছেন বেকার শ্রমিকরা।

উপজেলা এলজিইডি সূত্র জানায়, রিপ-টু প্রকল্পের আওতায় ‘যাদুরচর-চরফুলবাড়ী ঘাট ভায়া মাদারটিলা রাস্তা উন্নয়ন’ কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৪ জানুয়ারি। এটি সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল ২০১৫ সালের ২৫ জানুয়ারি। ৪০৮২ মিটার থেকে ৭০০০ মিটারের রাস্তার উন্নয়নকাজ দুটি প্যাকেজে করা হয়। এর ব্যয় ধরা হয় ২ কোটি ৮০ লাখ ৩৪ হাজার ৩০০ টাকা। এলসি রাস্তাটির চেইনেজ ৪০৮২ মিটার। কিশোরগঞ্জের মেসার্স শাহিল এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এটির কাজ পায়। অপর ৭০০০ মিটার সংস্কার কাজ সময়মতো শেষ হলেও এলসি রাস্তার কাজ আজও অসমাপ্ত।

রৌমারী আমদানি ও রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শহিদুল ইসলাম শালু বলেন, কিশোরগঞ্জের মেসার্স শাহিল এন্টারপ্রাইজ কাজটি পেলেও ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় এক নেতা এর সাব-কন্ট্রাক্ট নেন। তিনি শুধু সময় ক্ষেপণ করছেন। ফলে তিন বছরেও এর শেষ হয়নি কাজ। স্থানীয় এলজিইডির কর্মকর্তাও এ ব্যাপারে তাকে কিছু বলছেন না।

শহিদুল ইসলাম বলেন, স্থলবন্দরের আমদানির মৌসুম এক মাস আগে শুরু হলেও এলসি রাস্তা বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও সরকারি রাজস্ব সবই স্থবির হয়ে পড়েছে। সেদিকে কারও খেয়াল নেই। তিনি অতি দ্রুত রাস্তাটি খুলে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।

এ ব্যাপারে রৌমারী উপজেলা প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, সড়কটির গাইড ওয়ালের জন্য নতুন বাজেট বরাদ্দ এসেছে। বন্যার কারণে সে কাজ করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব দ্রুত এর কার্পেটিংয়ের কাজ ধরা হবে। ঢাকাটাইম

LEAVE A REPLY