“আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ” বাংলা ব্যাকরণের এই প্রবাদকে বিশ্বাস এবং ধারন করে, আগামীর ভবিষ্যৎ, আগামী প্রজন্মের কর্নধার, কোমলমতি শিশু-কিশোরদের নৈতিক শিক্ষার দায়িত্ব নিজের কাধে তুলে নিয়ে সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশন ফেরিওয়ালার মত ঘুরে বেড়াচ্ছে দেশের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে। এরই অংশ হিসেবে “নৈতিক শিক্ষা এবং ফ্রি মেডিকেল ট্রিটমেন্ট” এর কার্যক্রম নিয়ে গত ১০ নভেম্বর ঢাকা জেলার, ধামরাই উপজেলার, নান্দেশ্বরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিশু-কিশোরদের কাছে গিয়েছিল সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশন ।
সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশন দেশের ছোট ছোট কোমলমতি শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করে। ব্যারিষ্টার, ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, আর্কিটেকচার এবং শিক্ষকসহ সকল শিক্ষিত মানুষগুলোর সম্মিলিত প্রয়াস এবং উদ্যোগে গড়ে উঠেছে সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশন। তাদের সাথে আছে বাংলা এবং ইংলিশ মিডিয়ামের একদল শিক্ষিত তরুন। যারা নিজেদের স্ব স্ব ইচ্ছাতেই সেচ্ছাসেবক হিসেবে কোমলমতি বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। দুপুর ১১টা নাগাদ সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশনের টিম কড়া নাড়ে নান্দেশ্বরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
হাসিখুশি প্রানবন্ত শিশু-কিশোররা খুব স্বাভাবিক ভংগিতেই বরণ করে নেয় সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশনকে। শুরু হয় ফাউন্ডেশনের টিমওয়ার্ক। ছোট ছোট শিশু এবং কিশোরদের নিয়ে শুরু হয় নৈতিক শিক্ষার পর্ব। সততা, দয়ালুতা, মানবতা, সেবা, দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ, লোভকে পরিত্যাগ করা, বিশ্বাসী হিসেবে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা, বড়দের সম্মান করা, কথা দিয়ে কথা রাখা, মিথ্যা বলা মহাপাপ এই সমস্ত বিষয়গুলোকে অতিসুন্দর এবং সুনিপুনভাবে বাচ্চাদের মাঝে পাঠদান করানো হয় হাসি এবং আনন্দের কৌশলে, যার ফলে কিছুক্ষনের মধ্যেই বাচ্চারা হয়ে উঠে জীবন্ত এবং প্রানবন্ত। সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশন বিশ্বাস করে, এই সামান্য কয়েকটি পাঠদান মনে ধারণ করে যখন কোন শিশু, তরুন থেকে প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠবে; তখন সেই তরুণ প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে কখনোই জাতির মঙ্গল ব্যতীত অমঙ্গল সাধন করতে পারবে না।
নৈতিক শিক্ষা তাকে বাধা দিবে, অনৈতিক কাজ করতে। ক্রমশই সে হয়ে উঠবে দেশ এবং জাতির সম্পদ। একসময় সেই তরুণ তার সাধ্যমত নিজের পরিবার, নিজের সমাজ, নিজের গ্রাম, নিজের শহর, নিজের দেশকে নিয়ে যাবে অনেক অনেক সম্মানের তরে; যেই দেশে থাকবেনা কোন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামা, থাকবেনা জঙ্গির মত নিকৃষ্ট কার্যক্রম। থাকবে কেবল ভাতৃত্বের বন্ধন, থাকবে মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসা, থাকবে ব্যক্তিত্ব, থাকবে সম্মান।
পাঠদানের সময় শিশুদের মাঝে সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশনের করা নৈতিক শিক্ষার বই প্রদান করা হয়। যে বই পড়ে তারা নিজেদেরকে একজন সৎ এবং ভালো মানুষ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবে ।
এরপর শুরু হয় ফাউন্ডেশনের দ্বিতীয় পর্ব। এই পর্বে কোমলতি শিশু এবং কিশোরদেকে ফ্রি মেডিকেল ট্রিটমেন্ট দেয়া হয়। সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশনের মতে, সুস্থ মন এবং সুস্থ প্রাণ ব্যতীত কখনোই একজন শিশু নিজেকে পরিপূর্নভাবে বিকশিত করতে পারে না।
এবার ফিরে আসার পালা, ফিরে আসার সময় সৌহার্দ্য ফাউন্ডেশনের গাড়ি থামে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানেই হয় টিমমেম্বারদের দুপুরের খাবার। খাবার শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২ ঘন্টার বিরতি, এই দুই ঘন্টায় টিমমেম্বাররা ঘুরাঘুরি করে নিজেদের ক্লান্তিদূর করে নেয়। হাসি আর আনন্দে ভরে উঠে নিজেদের মন ।