কানাডায় স্থায়ী হতে আবেদন করুন

অভিবাসনের জন্য বাংলাদেশীদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকে সাগর পাড়ের অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড আর উত্তর আমেরিকার উন্নত কানাডা। তবে নতুন অভিবাসন আইন ওশেনিয়ার দ্বীপ মহাদেশ অস্ট্রেলিয়া আর দ্বীপরাষ্ট্র নিউজিল্যান্ডের চেয়ে একটানে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডাকে তুলে এনেছে পছন্দের শীর্ষে।

বাংলাদেশের অভিবাসন প্রত্যাশীদের সামনে স্থায়ী নাগরিকত্ব লাভের অবারিত সুযোগের দুয়ার খুলে দিয়েছে কানাডা সরকার। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে এরই মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বাংলাদেশি সামিল হয়েছেন বহুকৃষ্টির কানাডায় স্থায়ী অভিবাসী হওয়ার দৌড়ে। চলতি বছর ছাড়াও আসছে ২০১৭ সালেও অনেকে বহুল আকাঙ্ক্ষিত এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে পাড়ি দেবেন উচ্চ জীবনমানের সমৃদ্ধ কানাডায়।

বিভিন্ন ক্যাটাগরি ও প্রোগ্রামে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আপনিও কানাডায় অভিবাসী হতে পারবেন। আপনার যদি গ্রাজুয়েশন আর কাজের অভিজ্ঞতার সঙ্গে ইংরেজিতে একটু দক্ষতা থাকে তাহলে সপরিবারে আপনিও হতে পারেন উন্নত কানাডায় গর্বিত অভিবাসী। এজন্য ৬ থেকে ৭ মাসের বেশি সময়েরও প্রয়োজন পড়বে না। তবে প্রক্রিয়াটা হওয়া চাই যথাযথ আর নিখুঁত। এক্ষেত্রে একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ আইনজীবীর পরামর্শ ও সহায়তা আপনাকে নিশ্চিত করতে পারে আবেদনের সাফল্য। তাই ২০১৬ সালে যারা আবেদনের সুযোগ মিস করেছেন তারা ২০১৭ সালের জন্য প্রস্তুতি নিন এখন থেকেই।

আর জেনে নিন কোন ক্যাটাগরি আর প্রোগ্রামে কানাডায় অভিবাসী হওয়ার সহজ সুযোগ আছে আপনার।

এক্সপ্রেস এন্ট্রি (Express Entry)
এটি কানাডায় অভিবাসনের সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রোগ্রাম। এর সর্বশেষ ড্র অনুষ্ঠিত হয় গত অক্টোবরে। এতে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অধিক সংখ্যক মানুষ অভিবাসনের জন্য আবেদনের অনুমতি পান। এ ঘটনা অভিবাসন প্রত্যাশীদের মনে প্রত্যাশার আলো আরো বেশি করে জ্বালিয়ে তোলে।

শেষবার সিআরএস পয়েন্ট কমিয়ে ৪৭৫ করা হয়েছে। এতে নো অবজেকশন সার্টিফিকেটের (NOC) যেমন কোনো কোটা নেই, তেমনি নেই সংখ্যার সীমাবদ্ধতা (limitation of numbers)। আসছে বছরের শুরুতেই ফের ড্র হবে এ প্রোগ্রামের। তাই কাজের অভিজ্ঞতা আর ভালো আইইএলটিএস স্কোর থাকলে আবেদন করার এখনই উপযুক্ত সময়।

প্রভিশনাল প্রোগ্রাম
এক্সপ্রেস এন্ট্রি ছাড়াও বিভিন্ন প্রভিশনাল প্রোগ্রামের আওতায় (পিএনপি) দ্রুততম সময়ে দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে সপরিবারে নাগরিকত্ব লাভ করা যায়। কানাডার মোট ১১ প্রদেশ (প্রভিন্স) আলাদা আলাদাভাবে অভিবাসনের প্রক্রিয়া হাতে নিতে পারে। একেক প্রদেশ একেক সময়ে প্রোগ্রাম ঘোষণা করে যোগ্যদের মনোনয়ন দেয়। এসব ক্ষেত্রে আবেদকারীকে খুব বেশি যোগ্য হতে হয় না। অনেক ক্ষেত্রেই শর্ত শিথিল করতে দেখা যায়।

এগুলোর মধ্যে বর্তমানে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রভিনশিয়াল প্রোগ্রামটি চালু আছে। আর শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে বহু কাঙ্ক্ষিত নোভা স্কশিয়া (Nova Scotia) আর সবার পছন্দের অনটারিও প্রভিনশিয়াল নমিনি প্রোগ্রাম।

ব্রিটিশ কলাম্বিয়া প্রভিনশিয়াল প্রোগ্রাম
আইইএলটিএস এ মাত্র সাড়ে ৫ স্কোরসহ বছর দু’য়েকের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলেই সাধারণ গ্রাজুয়েটরা কানাডার অন্যতম সুন্দর এই প্রদেশে আবেদন করতে পারেন।

এ প্রোগ্রাম চারটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। এগুলো হলো এক্সপ্রেস এন্ট্রি বিসির আওতায় স্কিলড ওয়ার্কার ও ইন্টারন্যাশনাল গ্রাজুয়েট এবং স্কিলস ইমিগ্রেশনের আওতায় স্কিলড ওয়ার্কার ও এন্ট্রি লেভেল সেমি স্কিলড।

এই দুই প্রধান ক্যাটাগরি বাদ দিলে যাদের আর্থিক সামর্থ্য আছে তারা বিভিন্ন ইনভেস্টর প্রোগ্রামেও পরিবারসহ অভিবাসী হতে পারেন।

এছাড়া স্বল্পমেয়াদী ভিসাগুলো হলো- স্টুডেন্ট ভিসা, ভিজিটর ভিসা ও সুপার ভিসা। তবে চাকরিসহ সবচেয়ে সহজ ও ভালো অফার হলো কেয়ারগিভারস প্রোগ্রাম। বাংলাদেশিরা সহজেই এ প্রোগ্রামের আওতায় কানাডায় দ্রুত অভিবাসী হতে পারেন।

কেয়ারগিভার প্রোগ্রাম (LCP)
এ প্রোগ্রামের আওতায় মাত্র মাস ছয়েকের মধ্যেই সপরিবারে কানাডায় স্থায়ী হওয়া যায়। এতে আবেদন করতে পারবেন কেবল সার্টিফায়েড নার্সরা। এতে অন্য প্রোগ্রামের মতো ৬৭ পয়েন্ট বা ১২০০ সিআরএস প্রয়োজন নেই। ন্যূনতম আইইএলটিসসহ নার্সিংয়ে যাদের ডিপ্লোমা বা বিএসবি আছে তারা সরাসরি আবেদন করে চাকরিসহ কানাডায় স্থায়ী হতে পারবেন এই প্রোগ্রামের আওতায়। এদের প্রধান কাজ হবে শিশু শিক্ষা ও যত্ন, বয়স্কদের সেবা, ফার্স্টএইড ইত্যাদি।

তবে ট্রেড স্কিলড অ্যাসেসমেন্ট সার্টিফিকেট ও প্রভিনশিয়াল নমিনেশন ছাড়া কোনো আবেদন জমা দেওয়া হয় না। শিক্ষাগত যোগ্যতা কমপক্ষে ডিপ্লোমা/গ্রাজুয়েট। থাকতে হবে অন্তত ২ বছরের অভিজ্ঞতা। বয়স হতে হবে ২১ থেকে ৫৩ বছর। এটিই কানাডার সর্বশেষ ফার্স্ট কাম ফার্স্ট সার্ভ পদ্ধতির অভিবাসন প্রোগ্রাম।

 

LEAVE A REPLY