সোসাইটিনিউজ ডেস্ক: কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার অধিকাংশ কৃষক জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে কৃষি জীবনকে আষ্টে-পৃষ্টে ভালবেসেছেন। ধান চাষের পাশাপাশি মৌসুমি শাক-সবজি উৎপাদন করে আর্থিক অসচ্ছলতাকে দূর করেছেন। বর্তমানে পানি কচু, মুখি কচু ও লতিরাজ কচু চাষে মনযোগ দিয়েছেন এই উপজেলার কৃষক। সফল হয়েছেন অনেকেই।
গত কয়েক বছর পূর্বে মৌসুমে এই উপজেলায় বিপূল পরিমানে বিভিন্ন জাতের কচু চাষ করলেও কয়েক বছর যাবত কৃষরা কচু চাষ থেকে সরে গিয়েছিল। গত বছর উপজেলার কিছু কৃষক কচু চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তাদের দেখে আরো অনেক কৃষক উৎসাহের সাথে এবছর আবারো উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কচু চাষে পূর্বের মত অগ্রহী হয়েছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার প্রতিটি এলাকার মাটির গুনাগুন বিচারে কচু চাষের উপযোগী এবং বিশেষ করে নিচু জমি। কচু চাষের জন্য প্রথমে ভালভাবে চাষ দিয়ে গোবর ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে জমি প্রস্তুত করতে হয়। বীজতলা তৈরি হলে ১ হাত পরপর চারা রোপন করতে হয়। বিশেষ করে বাংলা কার্ত্তিক মাস থেকে কচু চাষের উপযুক্ত সময়। কচু শাক, থেকে শুরু করে সবটুকুই খাওয়া যায়।
যে কারণে দামও বেশি পাওয়া যায়। কচু একটি জনপ্রিয় সবজি। এটি স্বাদে অতুলনীয়। পুষ্টিমানও রয়েছে। এর পাতা শাক হিসেবে, ফুল (পোঁপা), লতি, বাকল, কন্দ সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অথাৎ এটি এমন এক সবজি যার কোন অংশই ফালানোর মত নয়। কচু শাক খেলে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব অনেকাংশে পূরণ হয়। কচুতে প্রচুর পরিমানে আয়রন থাকায় এর পুষ্টিগুন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত্যধিক।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার প্রায় প্রত্যেকটি ইউনিয়নে কচুর চাষ রয়েছে। বিশেষ করে উপজেলার সাহেবাবাদ, শিদলাই, বড়ধুশিয়া, চন্দলা, সাজঘর, দেউস, চরের পাথর, রামনগর, জিরুইন, আসাদনগর, মালাপাড়া, নাগাইশ, নগরপাড় এ চাষ বেশি। বর্তমানে চাষীরা ব্যস্থ সময় পাড় করছেন ফুল, লতি, কন্দ কাটা নিয়ে। এব্যপারে উপজেলার সাহেবাবাদ পশ্চিমপাড়া গ্রামের হাজী তফাজ্জল হোসেন, আক্তার হোসেন এবং রেজেক মিয়া জানান, এক একটি কচুর দাম খুচরা বাজারে আকারভেদে ২৫ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত বিক্রয় করা যায়।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মুশিউল ইসলাম বলেন, কচু পুষ্টিমানে অতুলনীয়। কচু চাষীদের কৃষি অফিস থেকে রোগ বালাই দমনে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। প্রথমিক পর্যায়ে সরকারি প্রনোদনা কিংবা ঋণের ব্যবস্থা হলে এ চাষে সফলতা আসবে। প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে পারলে কৃষকরা উপকৃত হবে। ফলে একদিকে বেকার সমস্যা দূর হবে অন্যদিকে সবজির চাহিদা পূরণ হবে।