সিলেটে কলেজ ছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস হত্যা চেষ্টা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। সোমাবার বেলা সাড়ে ১১টায় সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম মো. সাইফুজ্জামান হিরোর আদালতে মামলার একমাত্র আসামি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক(বর্তমানে বহিষ্কৃত)বদরুল আলমের উপস্থিতিতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
সোমবার আলোচিত এ মামলায় ১৮জনের সাক্ষ্য নেয়ার কথা রয়েছে। ইতিমধ্যে মামলার বাদী খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুছসহ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী দিয়েছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বৃষ্টি বেগম সাক্ষ্য দিতে গিয়ে আদালতে জানিয়েছেন, বদরুল যখন খাদিজাকে কুপাচ্ছিলেন তখন কিছু ছাত্র খাদিজাকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে বদরুল তাদের চাপাতি নিয়ে ধাওয়া করেন। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেকটা ভয় পান।
এর আগে বেলা ১১ টার দিকে বদরুলকে আদালতে তোলা হয়। খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় মোট ৩৭ সাক্ষীর মধ্যে আজ সাক্ষ্য দেয়ার জন্য আদালতে ১৮ জন হাজির হন। সোমবার ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান।
গত ২৯ নভেম্বর চাঞ্চল্যকর এই মামলার একমাত্র আসামি বদরুল আলমের (২৯) বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৫ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন আদালত।
এ মামলায় সাক্ষী মোট ৩৭ জন। এর বাইরে মামলার বাদীও সাক্ষ্য দেবেন। মামলার চার্জশিটে দ্বিতীয় সাক্ষী হচ্ছেন খাদিজা বেগম নার্গিস।
আদালত সূত্র জানায়, খাদিজার ওপর হামলার পর মামলা হওয়ার এক মাস পাঁচ দিনের মাথায় শাহপরান থানার উপপরিদর্শক হারুনুর রশিদ গত ৮ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আদালতে দাখিল করেন। ১৫ নভেম্বর আদালতে অভিযোপত্রের শুনানি শেষে তা গৃহীত হয়।
উল্লেখ্য, গত ৩ অক্টোবর সিলেট এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলমের চাপাতির কোপে গুরুতর আহত হন খাদিজা। প্রথমে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর সেখান থেকে ৪ অক্টোবর তাকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে এনে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়।
স্কয়ার হাসপাতালে প্রথম দফায় নার্গিসের মাথায় ও পরে হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। তার অবস্থার একটু উন্নতি হলে লাইফ সাপোর্ট খুলে দেয়া হয়। এরপর আইসিইউ থেকে এইসডিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকে ২৬ অক্টোবর তাকে কেবিনে নেয়া হয়। এরপর আবারো মাথায় ও হাতে অস্ত্রোপচার করা হয়। বর্তমানে অনেকটা ভালো অবস্থায় রয়েছেন খাদিজা।
হামলার দিন ঘটনাস্থল থেকে বদরুল আলম আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে জনতা। আদালতে হামলার দায় স্বীকার করে জবানবন্দিও দিয়েছেন বদরুল। হামলার দায়ে তাকে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।