মালয়েশিয়ায় ৫ মাসে সর্বোচ্চ পাম অয়েলের মজুদ

সোসাইটিনিউজ ডেস্ক

চলতি বছরের নভেম্বরে মালয়েশিয়ায় পাম অয়েলের মজুদ বেড়েছে, যা পাঁচ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। উৎপাদনের পাশাপাশি দেশটি থেকে ভোজ্যতেলটির রফতানি কমায় মজুদ বেড়েছে। খবর রয়টার্স।

উৎপাদক, ব্যবসায়ী ও বিশ্লেষকদের ওপর জরিপের ভিত্তিতে রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মালয়েশিয়ায় নভেম্বরে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ বেড়ে ১৬ লাখ ৯০ হাজার টন পাম অয়েল মজুদ হয়েছে। চলতি বছরের জুনের পর এই প্রথম দেশটিতে পণ্যটির মজুদ বেড়েছে। নিম্নমুখী রফতানি চাহিদা পণ্যটির মজুদ বাড়াতে ভূমিকা রাখছে।

চলতি বছরের নভেম্বরে মালয়েশিয়া থেকে ১২ লাখ ৯০ হাজার টন পাম অয়েল রফতানি হয়েছে। এ পরিমাণ অক্টোবরের চেয়ে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ কম। ভোজ্যতেলের অন্যতম ভোক্তা দেশ চীন। দেশটিতে পণ্যটির চাহিদায় মন্দাভাবের কারণে গত মাসে মালয়েশিয়া থেকে পাম অয়েল রফতানি কমেছে।

কুয়ালালামপুরভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এমআইডিএফ রিসার্চের বিশ্লেষক অ্যালান লিম বলেন, ‘ভারত সরকারের ৫০০ ও এক হাজার রুপির পুরনো নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত স্বল্পমেয়াদিভাবে পাম অয়েলের চাহিদায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে তিন মাস সময় লাগবে বলে আমাদের ধারণা।’ তবে চলতি মাসের দ্বিতীয়ার্ধে চীনে পণ্যটির চাহিদা বাড়তে পারে। মূলত নতুন বর্ষ উপলক্ষে এ সময়ে দেশটি পাম অয়েলের মজুদ বাড়াতে শুরু করে। তবে যদি চীন মজুদে থাকা সরিষার তেল বাজারে সরবরাহ করে, তাহলে পাম অয়েল আমদানি কমার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন অ্যালান লিম।

গত মাসে মালয়েশিয়ায় ২ দশমিক ৮ শতাংশ কমে উৎপাদন হয় ১৬ লাখ ৩০ হাজার টন পাম অয়েল, যা জুলাইয়ের পর সবনিম্ন। গত বছরের এল নিনোর প্রভাবে এখনো দেশটির পাম গাছে ফলের সংখ্যা কমতির দিকে আছে, যার কারণে ভোজ্যতেলটির উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। এল নিনো প্রপঞ্চের কারণে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আবহওয়া অতিরিক্ত শুষ্ক হয়। এ কারণে পাম অয়েলের শীর্ষ দুই উৎপাদক দেশ মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ায় পণ্যটির উৎপাদন কমেছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ের বৃষ্টিপাত দেশ দুটোয় পণ্যটির উৎপাদন পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে।

‘গত বছরের শক্তিশালী এল নিনোর প্রভাবে এখনো ভুগছে পাম গাছগুলো। এ কারণে পাম অয়েল উৎপাদন এখনো কমতির দিকে আছে বলে জানিয়েছেন কুয়ালালমপুর কেপংয়ের কর্মকর্তা ফ্যাঙ্গ লয় প্লাট।’

গত মাসে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে সাবহা ও উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোয় ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা পাম ফল উৎপাদনে খুবই সহায়ক। তাই নভেম্বরে পাম অয়েল উৎপাদন কমলেও আগামী বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা পুনরুদ্ধারের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। রয়টার্সের জরিপমতে, মালয়েশিয়ায় গত মাসে স্থানীয়ভাবে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩১ টন পাম অয়েলের চাহিদা ছিল। আগামী মঙ্গলবার মালয়েশিয়ান পাম অয়েল বোর্ড পণ্যটির উৎপাদন, রফতানি, মজুদসহ যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করবে।

এদিকে নভেম্বরে উৎপাদন কমায় মালয়েশিয়ায় এখন পাম অয়েলের দাম বেড়েছে। বুরসা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভস এক্সচেঞ্জে ফেব্রুয়ারিতে সরবরাহ চুক্তিতে পাম অয়েলের দাম শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ বেড়ে প্রতি টন ৩ হাজার ১০৪ রিঙ্গিতে (৬৯৮ ডলার) লেনদেন হয়, যা ২৮ নভেম্বরের পর সর্বোচ্চ। এদিন পণ্যটি লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৬৪১ লট (প্রতি লট ২৫ টন)।

LEAVE A REPLY