ইবির প্রশ্নপত্রের ৮০টি প্রশ্নের ১৯টিই হাওয়া!

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মোট ৮০টি প্রশ্নের মধ্যে ১৯টিই প্রশ্নপত্রে ছিল না বলে জানা গেছে।

মঙ্গলবার দিনের শেষ শিফটে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে এ সমস্যা দেখা দেয়।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দ্রুত পদক্ষেপে বিষয়টি সমাধান সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী।

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার এসএম আবদুল লতিফ।

শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ইউনিট সূত্রে জানা যায়, ইবির ভর্তি পরীক্ষার তৃতীয় দিনে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ডি’ ইউনিটেরে ভর্তি পরীক্ষায় মোট ৮০টি প্রশ্নের মধ্যে ছাপার ভুলে ১৯টি প্রশ্ন বাদ পড়েছে।

বিকাল ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত চলা এ পরীক্ষার প্রশ্নে দুটি সেট কোড নির্ধারণ করা হয়। ‘এ’ এবং ‘বি’ কোডে বিভক্ত এই প্রশ্নপত্রের ‘বি’ সেটের প্রশ্নের মধ্যে ১৯টি প্রশ্ন ছিল না।

প্রশ্নপত্র দেখা যায়, ‘বি’ সেটের প্রশ্নে রসায়নের মোট ৩০টি প্রশ্ন থাকার কথা থাকলেও সেখানে ৯টি প্রশ্ন ছিল না। এছাড়া ইংরেজির ১০টি প্রশ্ন থাকার কথা থাকলেও প্রশ্নপত্রে ইংরেজি থেকে কোনো প্রশ্ন ছিল না।

পরীক্ষা শুরুর মিনিটদশেক পরে শিক্ষার্থীরা হল পরিদর্শকদেরকে বিষয়টি জানালে তারা ইউনিট সমন্বয়কদেরকে জানান।

পরে ইউনিট সমন্বয়করা বিষয়টি ভিসিকে জানালে ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. শাহিনুর রহমান, ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহা ড. এম ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবনে গিয়ে ইউনিট সমন্বয়কদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রশ্ন ফটোকপি করে সরবরাহ করার নির্দেশ দেন। পরে প্রশ্ন ফটোকপি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত ছয়টি হলে সরবরাহ করে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বিষয়টি যখন নজরে আসে তখন বিজ্ঞান অনুষদের বেশ কিছু শিক্ষক এবং ছাত্ররা প্রশ্ন ফটোকপি করে বিভিন্ন ভবনে দৌড়াতে দৌড়াতে নিয়ে যায়।

এদিকে প্রশ্নপত্রের অসঙ্গতি দেখে অনেকটা হতভম্ভ হওয়ার কথা বলেছেন ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা।

সাইফুল ইসলাম নামে এক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘প্রশ্ন ভুল দেখার পর পরই বিষয়টি হলের শিক্ষকদের জানাই। শিক্ষকরা আমাদেরকে প্রায় ২০ মিনিট পরে ফটোকপি করা প্রশ্ন দেয়। বিষয়টি মনোযোগে বিঘ্ন ঘটিয়েছে, যার প্রভাব পরীক্ষায়ও পড়েছে। এছাড়া আমাদেরকে সময় বাড়িয়ে দেয়ার কথা বললেও সেটি করা হয়নি।’

তবে ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান অনুষদের হল রুমে দায়িত্বে থাকা প্রফেসর ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফি যুগান্তরকে বলেন, ‘প্রশ্ন নিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে বিষয়টি সত্য। তবে আমরা সময় বাড়িয়ে দিয়েছি।’

এদিকে প্রশ্নপত্র ছাপার ত্রুটির কারণ জানতে ট্রেজারার প্রফেসর ড. সেলিম তোহাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. কাজী আখতার হোসেন, রেজিস্ট্রার এসএম আবদুল লতিফ। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে ‘ডি’ ইউনিটের সমন্বয়কারী প্রফেসর ড. শামসুল আলম বলেন, ‘আমাদের অজান্তে ভুল হয়েছে। পরবর্তীতে প্রশ্ন প্রিন্টি করে পরীক্ষার্থীদের মাঝে সরবরাহ করা হয়েছে।’

ভিসি প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে তাৎক্ষণিকভাবে মিসিং প্রশ্ন ফটোকপি করে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এছাড়া কিভাবে প্রশ্ন মিসিং হলো তা খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

LEAVE A REPLY