আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম জয়াললিতার মৃত্যর পর আইনমাফিক কাউকে নিজের উত্তরাধিকারী হিসেবে ঘোষণা করে গেছেন কি না, অথবা কোনও উইল তৈরি করেছিলেন কি না – সেটাও এখনও জানা যায় নি। তাই তিনি কত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রেখে গেছেন আর কে বা কারা সেই সম্পত্তি পাবে – তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম জয়াললিতাকে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন সম্পত্তির একটি মামলায় জেলেও যেতে হয়েছিল। যদিও সেই মামলা থেকে পরে তিনি নিষ্কৃতি পেয়েছিলেন।
কত সম্পত্তি রেখে গেছেন জয়াললিতা?
চলতি বছরের মে মাসে তামিলনাডুতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময়ে সম্পত্তির হিসাবের আনুষ্ঠানিক হলফনামায় জয়াললিতা যে ঘোষণা দিয়েছিলেন সেই হিসেবে তাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় ১শ ১৪ কোটি রুপি (উল্লেখিত মোট পরিমাণ ১১৩ কোটি, ৭৩ লক্ষ, ৩৮ হাজার ৫৮৬ রুপি)।
জয়াললিতা তাঁর কাছে ২১ কিলোগ্রামের থেকে কিছুটা বেশী সোনা, আর ১২৫০ কিলোগ্রাম রূপার গয়না আছে বলেও তখন জানান।
আর জয়ললিতার কাছে নগদ ছিল ৪১ হাজার, আর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ছিল ১০ কোটি ৬৩ লক্ষ ৮৩ হাজার ৯৪৫ রুপি।
বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার, ডিবেঞ্চার আর বন্ড প্রভৃতিতে তাঁর বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল প্রায় সাড়ে ২৭ কোটি রুপি।
দুটি টয়োটা প্রাডো এসইউভি সহ মোট নয়টি গাড়ি আছে তাঁর, যেগুলির মোট মূল্য ৪২ লক্ষ রুপি।
সব মিলিয়ে ৪১ কোটি রুপির অস্থাবর সম্পত্তির কথা তিনি জানিয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনের কাছে দাখিল করা হলফনামায়।
তবে স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে সবচেয়ে বেশী যেটা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে জয়াললিতার মৃত্যুর পরে, তা হল চেন্নাইয়ের পোয়েজ গার্ডেন এলাকায় ২৪ হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে তাঁর বাংলোটি। এটার বাজারদর প্রায় ৪৪ কোটি রুপি।
এই বাংলো বাড়িটি তিনি তাঁর মায়ের সঙ্গে যৌথভাবে কিনেছিলেন ১৯৬৭ সালে। তখন তার দাম ছিল মাত্র এক লক্ষ ৩২ হাজার নয় রুপি।
এই বাংলো বাড়ি ছাড়াও জয়ললিতার নামে চারটি ব্যবসায়িক কমপ্লেক্স, আঙ্গুরের বাগান আর চাষের ক্ষেত রয়েছে।
মোট স্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৭২ কোটি রুপির কিছু বেশী।
‘লাখ টাকার প্রশ্ন’
বিবিসি-র তামিল বিভাগ বলছে, এখনও পর্যন্ত তাঁর কোনও আইনি উত্তরাধিকারীর কথা জানা যায় নি। তাই ওই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি কে পাবে, সেটাই এখন ‘লাখ টাকার প্রশ্ন’।
জয়াললিতার নিজের ভাইয়ের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তবে এঁদেরকে মরদেহের কাছে খুব একটা ঘেঁষতে দেননি সদ্য প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর দীর্ঘদিনের বান্ধবী শশিকলা।
শশিকলাকে তার সবথেকে নির্ভরযোগ্য পরামর্শদাতা হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দেখা গেলেও, কয়েক বছর আগে দুই বন্ধুর মধ্যে বিবাদ চরমে ওঠে। অন্তত জনসমক্ষে তেমনটাই দেখা গেছে।
তবে জয়াললিতা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে আবার শশীকলাকেই দেখা গেছে সমস্তটাই নিয়ন্ত্রণ করতে। মঙ্গলবার জয়াললিতাকে সমাহিত করা পর্যন্ত মরদেহের পাশে সবসময়ে দেখা গেছে।
তবে প্রয়াত জয়াললিতার বিপুল সম্পত্তির উত্তরাধিকার কে বা কারা হচ্ছেন তা একটি প্রশ্ন হয়েই থাকছে।’