আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
তাল তাল সোনা ছড়িয়ে রয়েছে মহাকাশে। ছড়িয়ে রয়েছে প্ল্যাটিনামও। আর মহাকাশে বিপুল পরিমাণে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বিরল, দুর্লভ, বহুমূল্য খনিজ পদার্থ। আর সে সব যে খুব দূরে রয়েছে, তা নয়। সেই সব সোনা, প্ল্যাটিনাম আর বহুমূল্য খনিজের তল্লাশে যে খুব একটা কল্পনাতীত দূরত্বে পাড়ি জমাতে হবে, এমনটাও নয়। ওই বিরল, বহুমূল্য পদার্থ রয়েছে আমাদের হাতের প্রায় নাগালেই। চাঁদে। কাছে-পিঠে থাকা বিভিন্ন গ্রহাণু বা অ্যাস্টারয়েডে।
মহাকাশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সোনা, প্ল্যাটিনাম সহ দুর্লভ, বহুমূল্য পদার্থগুলির সুবিশাল ‘খনি’গুলির খোঁজ-তল্লাশ আর সে সব পৃথিবীতে তুলে নিয়ে আসার অভিযানে নামছে এ বার তিনটি সংস্থা। আগামী বছর থেকেই শুরু হয়ে যাবে পর পর সেই সব অভিযান। তিনটি সংস্থার অন্যতম- ‘মুন এক্সপ্রেস’। যার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অনাবাসী ভারতীয় নবীন জৈন। অন্য দু’টি মার্কিন সংস্থা। ‘ডিপ স্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ’ আর ‘প্ল্যানেটারি রিসোর্সেস’।
সোনা, প্ল্যাটিনাম সহ কতটা দুর্মূল্য, দুর্লভ খনিজ পদার্থ ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মহাকাশের বিভিন্ন প্রান্তে?
মহাকাশে খনিজের সন্ধান শুরু হল বলে…
‘মুন এক্সপ্রেস’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান নবীন জৈন ও খ্যাতনামা জ্যোতির্পদার্থবিদ নিল ডিগ্রেস টাইসন গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে এক যৌথ প্রেস বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘পৃথিবীর ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত যতগুলি সোনার খনির হদিশ মিলেছে আর আগামী ১০০ বছরে আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহে আরও যত সোনার খনি আবিষ্কৃত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আর সেগুলি থেকে যে পরিমাণ সোনা উঠে আসতে পারে, তার চেয়ে অন্তত ৩০/৪০ গুণ বেশি সোনা রয়েছে আমাদের হাতের নাগালে থাকা কোনও একটি মাঝারি সাইজের গ্রহাণু বা অ্যাস্টারয়েডেই! আর আমরা যদি আমাদের নাগালে থাকা কোনও একটি মাঝারি সাইজের গ্রহাণুতে একটা পাঁচ তলা বাড়ির উচ্চতার ‘গর্ত’ খুঁড়তে পারি, তা হলে সেখান থেকে যে পরিমাণ প্ল্যাটিনাম পাওয়া যাবে, তা গোটা পৃথিবীতে যতটা প্ল্যাটিনাম রয়েছে, সেই ‘মজুত ভাণ্ডার’-এর প্রায় ৩০ গুণ!
মহাকাশে খনিজের সন্ধান শুরু হল বলে…
কোনও কল্প-কাহিনী নয়। নয় কোনও গল্পকথাও। এই স্বপ্নটা দেখেছিলেন ভারতের প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালাম। তিনিই প্রথম বলেছিলেন, ‘‘চাঁদকে আমরা মানবকল্যাণের কাজে ব্যবহার করতে পারি। চাঁদ থেকে তুলে আনতে পারি বিপুল পরিমাণে খনিজ সম্পদ। আর সেই খনিজ সম্পদ দিয়ে আমাদের এই বাসযোগ্য গ্রহে খনিজ সম্পদের ঘাটতিটা পুষিয়ে নিতে পারি। এই ভাবে আমরা চাঁদেই গড়ে তুলতে পারি মানবসভ্যতার দ্বিতীয় উপনিবেশ। অধ্যাপক কালামের সেই স্বপ্নটাকে ঘটনাচক্রে, শেষমেশ সত্যি করে তুলতে চলেছে অনাবাসী ভারতীয় নবীন জৈনের সংস্থা- ‘মুন এক্সপ্রেস’। যারা কোনও গ্রহাণু নয়, আমাদের বড় সাধের, বড় কাছের চাঁদ থেকে দুর্মূল্য, দুর্লভ খনিজ পদার্থ তুলে আনার অভিযানে নামতে চলেছে আগামী বছর থেকেই।
সূত্র: আনন্দবাজার