চার বছর পর আবার মিরপুরে শেরে বাংলা স্টেডিয়াম। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ হোক আর নাই হোক, একটু নার্ভাস লাগারই কথা। এই চার বছরে কতো আনন্দ, কতো দুঃসহ বেদনা এবং কলঙ্ক সঙ্গী হয়েছে। সব যেনো এক লহমায় মনে পড়ে যাচ্ছিলো। একটু হালকা হতেই খুব প্রিয় বন্ধু, সাবেক ক্রিকেটার ও কোচ আশিকুর রহমান মজুমদারকে ফোন দিয়েছিলেন। বন্ধু বললেন, একটা ৮০-৯০ রানের ইনিংস খেললে চাপ কমে যাবে।
মোহাম্মদ আশরাফুল আশি-নব্বই রানে আটকে থাকলেন না। সেঞ্চুরি করলেন। চার বছর পর মিরপুরে ক্রিকেট খেলতে নেমে ১১০ বলে ১১৮ রানের ঝলমলে এক ইনিংস খেলে ফেললেন বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ সবুজ দলের বিপক্ষে।খেলাটা ছিল একেবারেই অনুশীলনের জন্য।
একদিন পর বাংলাদেশ যুবদল শ্রীলঙ্কায় রওনা দেবে এশিয়া কাপে অংশ নিতে। তার আগে চূড়ান্ত প্রস্তুতি হিসেবে মিরপুরে খেললো তারা একটি দিবা-রাত্রির ম্যাচ। লাল দল ও সবুজ দলে ভাগ হয়ে খেললো যুব দল। লাল দল পুরোটাই সাইফ হাসানের নেতৃত্বাধীন যুবদল ছিল। সবুজ দলে কয়েকজন প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় ছিলেন ঘাটতি পোষাতে। আর ছিলেন গত কিছুদিন ধরে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সাথেই অনুশীলন করা আশরাফুল।
ম্যাচ যে যেমনই হোক, আশরাফুল যে খুব রোমাঞ্চিত মিরপুরে খেলতে পেরে এবং সেঞ্চুরি করতে পেরে, তা লুকানোর চেষ্টা করলেন না, ‘অবশ্যই এক্সাইটেড ছিলাম। সেই ২০১৩ বিপিএলের পর তো আর মিরপুরে খেলিনি। এরপর বাইরে খেলেছি। আমেরিকায় সেঞ্চুরিও করেছি। কিন্তু মিরপুর স্টেডিয়াম হলো আমার জন্য বাড়ির মতো। সেখানে ফিরে আসাটা হলো। আর সেঞ্চুরিটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই যুবদলটা খুব ভালো। ওদের বোলিংয়ের বিপক্ষে রান করতে পেরে আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে নিজেকে।’
২০১৩ সালের বিপিএলেই ফিক্সিং কান্ডের জন্য নিষিদ্ধ হন আশরাফুল। দীর্ঘ শুনানি ও তদন্ত শেষে আসে তার নিষেধাজ্ঞা। নিষেধাজ্ঞা এই বছরই শেষ হয়েছে। কিন্তু আইসিসি, বিসিবি ও আশরাফুল, ত্রিমুখী এক সমঝোতার ফলে সাবেক এই জাতীয় দল তারকা আরও দুই বছর বিসিবির কোনো দলের জন্য বিবেচিত হবেন না। সেই সাথে খেলতে পারবেন না কোনো ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট টুর্নামেন্টও।
এই কারণেই ক্রিকেটে ফেরার পর তিন রাউন্ড জাতীয় লিগ খেলা ছাড়া নিজের খেলার আর কোনো জায়গা পাচ্ছিলেন না। এমন সময় বিসিবির অনুমতিক্রমে তিনি অনুশীলন শুরু করেন যুবদলের সাথে। সে জন্য বিসিবিকে ধন্যবাদ জানালেন, ‘আমার এই সময় অনুশীলন ও খেলার মধ্যে থাকার দরকার ছিল। বিসিবি আমাকে সেই সুযোগটা দেওয়ায় সকলকে ধন্যবাদ দিতে হয়।’