‘ধর্মঘট, আগুন জ্বালানো মানুষ পছন্দ করে না’

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, যখন-তখন ধর্মঘট, আগুন জ্বালানো মানুষ পছন্দ করে না। এটা বিরোধী দল ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছি। আমরা ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মধ্য থেকে বের হয়ে ৭ শতাংশে পৌঁছেছি। আগামী দুই বছরে আমরা ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে পৌঁছাতে পারব। আমরা সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।’

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সমুদ্রসৈকত কুয়াকাটায় আজ শনিবার দুপুরে তিন দিনব্যাপী ‘মেগা বিচ কার্নিভ্যাল’-এর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এই বিচ কার্নিভ্যালের আয়োজন করেছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনসচিব এস এম গোলাম কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন।

বেলুন উড়িয়ে মেগা বিচ কার্নিভ্যালের উদ্বোধন করছেন অতিথিরা। ছবিটি শনিবার দুপুরের দিকে তোলা। ছবি: সাইয়ানকুয়াকাটা প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কুয়াকাটাকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করতে, আকর্ষণীয় করতে, সব উদ্যোগ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর। তাঁর চেষ্টায় কুয়াকাটার অগ্রগতি হচ্ছে। কুয়াকাটাকে আরও আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। কুয়াকাটায় যাতে সবাই আসতে পারে, সে জন্য সবচেয়ে জরুরি যোগাযোগব্যবস্থা ভালো করা। উন্নয়ন করতে গেলে সবার আগে রাস্তা করা জরুরি। সেটা সড়ক, নদী, রেলপথ দিয়ে হতে পারে। খুশির খবর হলো, আমরা অচিরেই এ এলাকার সঙ্গে রেল যোগাযোগের পথ করতে যাচ্ছি।’ পায়রা বন্দর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আপনারা অনেক ভাগ্যবান। কারণ, আপনাদের পাশেই হচ্ছে দেশের গভীর সমুদ্রবন্দর পায়রা। পায়রা বন্দরকে ঘিরে দেশের অর্থনীতির গতি পাল্টে যাবে।’

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য থাকবে না বলে পৃথিবীর অঙ্গীকার। আমাদের দেশে দারিদ্র্যসীমার নিচে সাড়ে তিন কোটি লোক বসবাস করছে। তাদের ওই অবস্থান থেকে বের করে নিয়ে আসতে হবে। বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম, যেখানে দারিদ্র্য কমে যাচ্ছে। অতিদারিদ্র্য আরও কমে যাচ্ছে।’ অর্থমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘এ দেশ যখন স্বাধীন হয়, তখন ১১০ লাখ টন খাদ্য উৎপাদন হতো। এখন উৎপাদন হচ্ছে ৩৮০ লাখ টন। আমাদের চাষিরা অনেক দক্ষ, কর্মঠ। আমাদের জমি কমে গেলেও আমরা উৎপাদন বাড়াতে পেরেছি।’ আগামী দুই বছরে দেশের আরও অগ্রগতি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এরপর তিনি তিন দিনের ‘মেগা বিচ কার্নিভ্যালের’ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এর আগে বেলা ১১টায় এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে তিন দিনের মেগা বিচ কার্নিভ্যালের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে। রাশেদ খান মেনন এ শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন। এতে রাজনৈতিক নেতারা, প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা, জনপ্রতিনিধিরাসহ সাধারণ জনগণ অংশ নেয়। পর্যটন মোটেল হলিডে হোমস প্রাঙ্গণ থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে কুয়াকাটার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শেষ হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পটুয়াখালী জেলা সাংস্কৃতিক দল ও রাখাইন শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।

সাগরকন্যা কুয়াকাটাকে সবার কাছে পরিচিত করতে তিন দিনের মেগা বিচ কার্নিভ্যালের আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয় পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার কুয়াকাটা থেকে। ছবি: সাইয়ানতিন দিনের মেগা বিচ ক্যার্নিভ্যালের প্রথম দিনের অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে ছিল ১৫ বছরের কম বয়সের বাচ্চাদের জন্য ফান গেমস, বিচ ফুটবল, বিচ ক্রিকেট, হাডুডু, ভলিবল খেলা, ঘুড়ি উৎসব, রাখাইন বৈচিত্র্যের ফুড ফেস্টিভ্যাল, শামুক-ঝিনুকের মেলা, ওয়াটার বাইক, এভিটি রাইডস, ক্যাম্প ফায়ারিং, ফরেস্ট ট্রাকিং, বারবিকিউ, সাইকেল শোভাযাত্রা, লেজার শো, ফানুস ওড়ানো। প্রথম দিনের সর্বশেষ আকর্ষণ ছিল স্থানীয় রাখাইন শিল্পীদের এবং ব্যান্ড গ্রুপ চিরকুটের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

কুয়াকাটার কর্মসূচি শেষ করে বিকেলে অর্থমন্ত্রী পায়রা সমুদ্রবন্দরের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন। পায়রা সমুদ্রবন্দরে অর্থমন্ত্রীকে স্বাগত জানান বন্দরের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কমান্ডার (অব.) এম রাফিউল হাসান।

LEAVE A REPLY