সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য ও প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়ে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে আরেকটি মামলায় চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীকে পুলিশের হেফাজতে দুইদিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আফসানা আবেদীন রিমান্ড আবেদন শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। আসামির পক্ষে কোন আবেদন ছিলনা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. নাজমুল হক আসামিকে ৭ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি চান। আদালতে শুনানিতে বলেন, আসামি কি কারণে ও কেন এরকম উক্তিসহকারে ফেসবুকের পাতায় মন্তব্য প্রকাশ করলেন। এছাড়া এর পেছনে আর কারো ইন্ধনদাতা রয়েছে কিনা তা জানা প্রয়োজন। তদন্তের স্বার্থে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞসাবাদ না করতে পারলে রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে না।
গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে ইরাদ সিদ্দিকী তার ফেসবুক আইডিতে এক স্ট্যাটাসে মন্তব্য করেন ‘শেখ হাসিনাকে গুপ্তহত্যা সম্ভব নয় কারণ শেখ হাসিনার চারিদিকে ভারতের বিশেষ নিরাপত্তার চাদর রয়েছে। ভারতীয়রা সরাসরি শেখ হাসিনার নিরাপত্তার বিধান করছে। কারণ শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থেরই প্রতিনিধিত্ব করছেন। শেখ হাসিনাকে গুপ্তহত্যা ছাড়া বাংলাদেশে ভারসাম্য ও গণতন্ত্র ফেরানো সম্ভব নয়। ‘
তার এ স্ট্যাটাসটি দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশ করা হয়। একই দিন রাতে অরেকটি স্ট্যাটাসে একটি ছবি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে একটি ঘোড়ার তৈরি চিত্রের ছবি পোস্ট দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের পিতাকে বলিয়াদির জমিদারের ঘোড়ার ভৃত্য বলে মন্তব্য করেন। এর আগেও বঙ্গবন্ধুর ছবির নিচে মাধ্যম আঙুল প্রদর্শন করিয়ে ট্রল করে পোস্ট দেন। সেখানে তিনি লেখেন, ভাস্কর্য হাজারো শবের প্রতিনিধিত্ব করে। এ স্ট্যাটাসটি দেন গত ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে ইরাদের বিরুদ্ধে ধামরাই থানায় বাদী হয়ে গত বছরের পহেলা অক্টোবর এ মামলাটি করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও পৌর মেয়র গোলাম ফকির।
এছাড়া, একই কারনে ওই মাসেই ঢাকা সিএমএম আদালতে দুটি ও রাজধানীর কতোয়ালি থানায় একটি এবং গাজীপুর ও বগুড়ায় একটি করে মামলা হয়।
চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভোরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগের হাতে গ্রেপ্তার হন ইরাদ সিদ্দিকী।
কোতোয়ালি থানার মামলায় ও্ইদিনই ইরাদকে আদালতে হাজির করার পর পুলিশের হেফাজতে চারদিন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে পাঠানো হয়।