গলফ নয়, দাতব্য প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখাই তার কাছে মানসিক প্রশান্তি

প্রায় ৩০ বছর আগে নিরঞ্জন হিরানন্দানি এবং তার ভাই একত্রিত হয়ে ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইতে কিছু জমি ক্রয় করেছিলেন। সে থেকে শুরু। এরপর আর তাদের পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। শুধুই সামনে এগিয়ে যাওয়া।

সে জমিগুলোতে তারা একটি স্যাটেলাইট শহর গড়ে তোলেন। সেটি ধীরে-ধীরে হয়ে উঠে ব্যবসা-বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র। এর আগে ভারতে এ ধরনের চিন্তা-ভাবনা দেখা যায়নি।

নিরঞ্জন হিরানন্দানি এখন ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের অন্যতম। তার পরিবার শহরের বিভিন্ন জায়গায় জনস্বার্থে বহু স্কুল এবং হাসপাতাল পরিচালনা করে।

সাধারণত ধনী ব্যক্তিদের খাদ্য তালিকা কেমন হয় সেটি নিয়ে অনেকের আগ্রহ থাকে। এতো বিত্ত-বৈভবের মালিক সকাল, দুপুর কিংবা রাতে কী ধরনের খাবার খেতে পছন্দ করেন সেটি অনেকই জানতে চায়।

নিরঞ্জন হিরানন্দানির ব্যাপারেও অনেকের আগ্রহ আছে। সেজন্যই মুম্বাইতে বিবিসি’র একজন সংবাদদাতা নিরঞ্জন হিরানন্দানির বাড়িতে গিয়েছিলেন তার খাদ্য তালিকা দেখতে। এক টেবিলে বসে সকালের নাশতা করেছেন।

মি: হিরানন্দানি জানালেন, তিনি সকালের নাশতার প্রতি যথেষ্ট গুরুত্ব দেন। এর পেছনে তিনি বেশ সময় দেন। কিন্তু দুপুরে খাবারের জন্য তিনি খুব বেশি সময় ব্যয় করতে পারেন না। কারণ সারাদিন তাকে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকতে হয়।

সকালের নাশতায় দেখা গেল তিনি ‘ডাল পাকায়োন’ খাচ্ছেন। এটা বিভিন্ন প্রকারের ডালের মিশ্রণে তৈরি। এর সাথে রয়েছে রুটি। তিনি জানালেন এ খাবারটি কিছুটা ব্যতিক্রমী।

মি: হিরানন্দানি জানালেন, তিনি প্রচুর কাজ করতে পছন্দ করেন। প্রতিদিন তিনি তার সময়ের ২০ শতাংশ সময় ব্যবসায়িক কাজের বাইরে অন্য কাজে ব্যয় করেন।

সারাদিন ব্যবসায়িক কাজের বাইরে তিনি তার প্রতিষ্ঠিত স্কুল, হাসপাতাল এবং অন্যান্য দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোর খোঁজ-খবর রাখেন এবং সেগুলো দেখতে যান। তাকে অনেকেই পরামর্শ দেন যে কাজের ফাঁকে মানসিক প্রশান্তির জন্য গলফ খেলতে।

কিন্তু গলফ খেলা নয়, নিজের প্রতিষ্ঠিত দাতব্য প্রতিষ্ঠাগুলো ঘুরে দেখাটা মি: হিরানন্দানির কাছে আনন্দ উপভোগ করার মতো।

তিনি মনে করেন, একজন সফল ব্যবসায়ীর খেয়াল রাখতে হবে যাতে তার ব্যবসার সাথে জড়িত সকল পক্ষকে সন্তুষ্ট রাখা যায়। শুধু কোম্পানির কর্মচারীরা নয়, যারা নানাভাবে তার ব্যবসার সাথে যুক্ত আছে – যেমন বিনিয়োগকারী বা ক্রেতা, বিক্রেতা – সবাইকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টা করতে হবে।

সকল পক্ষের সন্তুষ্টি ছাড়া ব্যবসায়িক সাফল্য অসম্পূর্ণ থাকে বলে মনে করেন মি: হিরানন্দানি ।